,

মহম্মদপুরে স্কুল সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের পাল্টাপাল্টি মামলা

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পাল্লা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পাল্লা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আজিজুর রহমান ধলা ও প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যা পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজসহ শিক্ষা কার্যক্রম পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেছেন বলে জানা গেছে।

সভাপতি প্রধান শিক্ষকের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার জবাব চেয়ে নোটিশ দেন। জবাব না পেয়ে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং দীন মোহাম্মদ নামে এক সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীন মোহাম্মদ। এতে করে অডিট, বোর্ড থেকে বিভিন্ন কাগজপত্র আনা-নেয়াসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। ছাত্রীদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটায় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বের সুরাহা চান অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

জানা যায়, সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ, সভাপতির অনুমতি ছাড়া শিক্ষক হাজিরা খাতায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের কাজে গমন, ম্যানেজিং কমিটিকে গুরুত্ব না দেয়া, শিক্ষক ও ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ এনে কয়েকবার কারণ দর্শানো নোটিশ দেন।

কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব না দেয়ায় প্রধান শিক্ষককে চলতি বছরের মে মাসের ২১ তারিখ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন সভাপতি।

ওই মাসের ২৬ তারিখ শিক্ষক-ছাত্রী, ম্যানেজিং কমিটি, এলাকাবাসীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপজেলার পাল্লা বাজারে ওই অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এ ছাড়া গত জুলাই মাসের ৮ তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান ধলা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যাকে আসামি করে মাগুরার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে মামলা করেন।

এদিকে প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যাও বাদী হয়ে সভাপতি আজিজুর রহমান ধলাসহ পাঁচজনকে আসামি করে বিদ্যালয়ে নীতিমালাবহির্ভূত লোক নিয়োগ, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে চলতি মাসের ১৪ তারিখ মাগুরার মহম্মদপুর সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা করেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজুর রহমান ধলা ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীন মোহাম্মদ বলেন, প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে না দেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটের কাগজপত্র পৌঁছাতে পারছি না।

ছাত্রীদের এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড বোর্ড থেকে আনতে পারছি না। বিভিন্ন অডিট ও কাগজপত্র না থাকায় বিভিন্ন স্থানে দৌড়াদৌড়ির কারণে ছাত্রীদের ঠিকভাবে পাঠদানও করাতে পারছি না।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জুথিসহ কয়েক ছাত্রী জানায়, স্যাররা ঠিকভাবে আমাদের ক্লাস নিতে পারছেন না। পড়ালেখার অসুবিধা হচ্ছে। পরীক্ষায় ভালো ফল নিয়ে চিন্তায় পড়েছি।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অবৈধভাবে। আর যেহেতু আদালতে মামলা চলমান, সেহেতু রায় হওয়ার পর দায়িত্ব দিতে হলে দেব।

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. আলীম মোল্যার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল তার সঠিক তদন্ত করে সেসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর